বর্তমান সময়ে blogging একটি স্মার্ট পেশা বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশের অনেক মানুষ blogging-কে পেশা হিসেবে নিয়েছেন । অনেকেই এটাকে পেশন হিসবে আবার অনেকে প্রোফেশন হিসেবে বেছে নিয়েছেন । যারা 5-7 বছর আগে এই জগতে এসেছেন, তাদের অনেকেই আজকে সফল !
আপনারা যারা blogging করতে চান কিংবা অলরেডি ব্লগ তৈরী করে ফেলেছেন এবং নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন । কিন্তু আশানরুপ ভিসিটর পাচ্ছেন না । যাতে অনেক হতাশায় পরেছেন । ভাবছেন ব্লগিং দিয়ে কি আসলেই ইনকাম সম্ভব ? নাকি আমার দ্বারা সম্ভব না, অন্যরা কিভাবে কাজ করে সফল ? ইত্যাদি ইত্যাদি ! আপনি যদি এমন পরিস্থিতিতে আছেন, তাহলে এই পোষ্ট টি আপনার জন্য !
Also read –
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করবেন ২০২০? ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
আমি md hafiz এখানে শেয়ার করেছি কিভাবে একটি ব্লগে সফলতা অর্জন করবেন ! জানি না এমন আর্টিকেল কোথাও পড়েছেন কি না ! হয়তো পড়েও থাকতে পারেন । তবে এখানে আমি আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শেয়ার করছি । আপনারা যদি ফলো করেন, তাহলে আশা করি সফলতার হার 90% ! তবে পুরো সফলতা নির্ভর করবে আপনার পরিশ্রমের উপর ! অন্যথায় সফলতার হার 09% ! তাই দেরি না করে মূল কাজে আসি !
নিশ সিলেকশন
শুরুতেই যে কাজটি করতে হবে সেটা হলো নিশ (Eng: Niche) বা টপিক নির্বাচন । একটি বিষয় নিয়ে কাজ করবেন (Single Niche/ Niche Blog etc) নাকি দুনিয়ার সমস্থ বিষয় নিয়ে কাজ করবেন (Board Blog) ! এক্ষেত্রে অনেকেই হয়তো অনেক মানুষকে প্রশ্ন করেছেন কিংবা সাজেশন নিয়েছেন যে আপনি কোন নিশ নিয়ে কাজ করবেন ? নিশ সাইট নাকি Board Blog নিয়ে কাজ করলে দ্রুত সফলতা পাওয়া যাবে ?
কোন কাজই দ্রুত করা ঠিক না । তাড়াহুরোর কাজ হচ্ছে শয়তানের কাজ । তাই একটু সময় নিন ! শুরুতে নিশ সাইট নিয়ে কাজ করুন । এর অনেক সুবিধা রয়েছে ! অনেকেই প্রশ্ন করে, কোন নিশ নিয়ে কাজ করলে ভালো হবে ? আপনার কথার সোজা উত্তর হচ্ছে, আপনি যেই বিষয়ে ভালো জানেন, যেটা দিয়ে সাইট তৈরী করলে নিজেই কন্টেন্ট লিখতে পারবেন । এবং অনেক দিন কিংবা অনেক বছর নিজেই কন্টেন্ট লিখতে পারবেন ! এমন টপিক বা নিশ নির্বাচন করুন । হতে পারে সেটা ভ্রমন বিষয়ক, শিক্ষা বিষয়ক, টেকনোলজি বিষয়ক কিংবা রান্না বান্না ইত্যাদি ।
আপনার যদি কন্টেন্ট ক্রয় করার ইচ্ছা ও সামথ্য থাকে, তাহলে কন্টেন্ট রাইটার হায়ার করতে পারেন আপনার ইচ্ছামতো নিশে, যেটায় আপনি নিজে কন্টেন্টে লিখতে পারবেন না । কিন্তু এই নিশে অনেক প্রফিট !
এগুলো সাধারন বিষয় । এখন আসি মূল বিষয়ে, যেটা ফলো করলে সফল হতে পারনে ।
কিওয়ার্ড + কম্পিটিটর রিসার্চ
নিশ সিলেকশনের পর শুধু একটি সাইট রান করার জন্য প্রস্তুত থাকুন । কেনো একটি সাইট করতে বললাম, এই আর্টিকেলের শেষে বললবো ! তারপর নেমে পড়ুন কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে । কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য অনেক ফ্রি টুল পাবেন যেগুলো খুব কাজের । Google Keyword Planner (Now Google Ads) ব্যবহার করতে পারেন । Keyword Everywhere (Browser Extension) ও ব্যবহার করতে পারেন ।
যেসব কিওয়ার্ডে প্রতিমাসে সার্চ ভিলিউম 10k-100k, কিংবা 100k-300k ! এমন কিওয়ার্ড নির্বাচন করে Excel-এ সেভ করে রাখুন । তবে অবশ্যই লো কম্পিটিশনের হতে হবে ।
তারপর আপনার টপ 10 কম্পিটিটরদের নিয়ে রিসার্চ করতে হবে । দেখুন তারা কোন কোন কিওয়ার্ড নিয়ে গুগোলের#1 এ অবস্থান করছে । এসব কিওয়ার্ডের মধ্যে যেসব
কিওয়ার্ডে প্রতিমাসে সার্চ ভিলিউম 1k-10 অথবা 10k-100k , সেসব কিওয়ার্ড নিয়ে সবার আগে কাজ করুন ।
কিওয়ার্ডে প্রতিমাসে সার্চ ভিলিউম 1k-10 অথবা 10k-100k , সেসব কিওয়ার্ড নিয়ে সবার আগে কাজ করুন ।
এসব কিওয়ার্ডের মধ্যে লং টেল কিওয়ার্ড থাকতে পারে । যদি থাকে তাহলে সেগুলো নিয়ে আগে কন্টেন্ট পাবলিশ করুন ! 5-7 টি কিংবা 10 টির মতো কিওয়ার্ড নির্বাচন করুন । কেন বেশি সার্চ ভলিউমের কিওয়ার্ড নিয়ে কন্টেন্ট লিখতে বললাম না, সেটা একটু পরে বলতেছি । কেননা এমন কিওয়ার্ডই আপনাকে সফলতার মুখ দেখাবে !
সাইট তৈরী করুন
এখন আপনার কাজ হবে সাইট তৈরী করা । যদি বলেন কোন প্ল্যাটফর্মে সাইট তৈরী করলে ভালো হবে ? তাহলে আমি বলবো ”ওয়ার্ডপ্রেস” ! WordPress এর মাধ্যমে কোন কোডিং না জানলেও কোন সমস্যা ছাড়াই কাজ করতে পারবেন । WordPress-এ অনেক সুবিধা আছে , যেগুলো অন্য কোন প্ল্যাটফর্মে নাও পেতে পারেন । আর আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন কিংবা আমার মতো কোর্ডিং জানেন না, তাহলে ওয়ার্ডপ্রেসইই আপনার জন্য অনেক ভালো ।
ওয়ার্ডপ্রেস আপনাকে “SEO” তে অনেক সাহায্য করবে । যেটা নিউবিদের জন্য অনেক উপকারী । ওয়ার্ডপ্রেস-এর অনেক গুলো “SEO Plugins” আছে যেগুলো খুবই জনপ্রিয় । যেটা আপনাকে “ON Page SEO” তে অনেক সাহায্য করবে ।
তাই একটু কষ্ট করে ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করে ”ওয়ার্ডপ্রেস” এ সাইট তৈরী করার চেষ্ট করুন । বাংলাদেশে অনেক হোস্টিং কোম্পানি আছে যেগুলো ভালো সেবা দিয়ে থাকে । আপনার যদি মাস্টারকার্ডের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে বিদেশি কোম্পনি থেকে ডোমেইন + হোস্টিং ক্রয় করুন । এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে “ডোমেইন হোস্টিং” পোষ্ট টি পড়ে আসতে পারেন ।
কিওয়ার্ড নির্বাচন + আটিকেল রাইটিং + পাবলিশিং
যখন আপনার কম্পিটিটরদের রেংক করা কিওয়ার্ড নির্বাচন করা শেষ হবে, তখন আর্টিকেল লিখতে হবে । এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেমন আর্টিকেল পাবলিশ করবো ? অবশ্যই আপনার কম্পিটিটর থেকে ভালো !
উদাহরন: আপনার লং টেইল কিওয়ার্ড (যেটায় আপনার কম্পিটিটর মোটামুটি ভালো ভিসিটর পায়) হলো “Avast Free Antivirus 2019” অথবা “Avast Antivirus Free Download” ! এখন আর্টিকেল লিখুন আপনার কম্পিটিটর থেকে ভালো করে । আর্টি কেল ভালো করতে হবে, তাই বলে বড় আর্টিকেল নয় ।
খুজে দেখুন আপনার কম্পিটিটর কোন কোন বিষয় গুলো উল্লেখ করে নাই, সেসব বিষয় সুন্দর ভাবে তুলে ধরুন । এতে যদি আপনার কম্পিটিটরের থেকে আপনার আর্টিকেল বড় হয় তাহলে রেংক করতে বেশি সময় লাগবে না ! 5-7 টি কিংবা 10 টির মতো কিওয়ার্ড নির্বাচন করে এমন আর্টিকেল পাবলিশ করুন । তারপর ওয়েবমাস্টারে সাইট ভেরিফাই করে সাইটম্যাপ যোগ করুন ।
অনপেজ এসইও (SEO)
উপরের আর্টিকেল রাইটিং ইই হলো “ON Page SEO” ! জনপ্রিয় যেকোন “SEO Plugins” ইন্সটল করুন । তারপর আপনার সাইটে আর্টিকেল পাবলিশ করুন “SEO Plugins” এর নির্দেশনা অনুযায়ী “Green Signal” করার পর ।
পরবর্তী পোষ্টে পূর্বের পোষ্ট (কিওয়ার্ড) লিংকিং করুন । তারপর বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে পোষ্ট শেয়ার করুন ! কয়েকদিন পর দেখবেন গুগোল কিংবা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিসিটর আসা শুরু করবে ।
অফপেজ এসইও (Off Page SEO)
তারপর আপনার এসব কিওয়ার্ড রেংক করার জন্য “Off Page SEO” করুন । কিছু ওয়েব 2, কিছু কোয়ালিটি ব্যাকলিংক আপনার কিওয়ার্ডকে রেংক করতে সাহায্য করবে । প্রথমে টার্গেট নিন এসব লো কম্পিটিশন / লং টেইল কিওয়ার্ড রেংক করার জন্য । ভিসিটর কম আসলেও সমস্যা নেই । যখন এসব কিওয়ার্ড রেংক করবে তখন দেখবেন ভালো ভিসিটর আপনার সাইটে আসা শুরু করছে ।
এসব কিওয়ার্ড Rank করতে কেমন সময় লাগবে?
এটা পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার পরিশ্রমের উপর । যদি রেগুলার কাজ করেন, তাহলে 3 মাসের মধ্যে কিংবা তারও আগে রেংক করতে পারেন ।
এসব রেংক করা লো কম্পিটিশন / লং টেইল কিওয়ার্ড গুলোর উপকারীতা কি জানেন? না জানলে নিচের তথ্য গুলো দেখুন ।
উপকারীতা:
- আপনার সাইটে অল্প সময়ে কিছু ভিসিটর আসবে
- ভিসিটর আসলে ডোমেইন অথোরিটি (DA/PA) বাড়বে
- ডোমেইন অথোরিটি (DA/PA) বাড়লে অন্যান্য কিওয়ার্ড রেংক করা সহজ হবে
- অন্যান্য কিওয়ার্ড রেংক করা সহজ হলে সফলতার সম্ভাবনা 90%
বুঝতে পারছেন কিছু? নাকি বুঝেন নাই? নাম বুঝলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না !
পরবর্তী কাজ:
যখন লো কম্পিটিশন / লং টেইল কিওয়ার্ড গুলো থেকে ভিসিটর আশা শুরু করবে, তখন আপনার ডোমেইনের অথোরিটি (DA/PA) বাড়বে, তখন যেকোন কিওয়ার্ডই রেংক করা সহজ হবে । আর রেংক করা মানে সফলতা !
তাই এখন আপনার কাজ হবে পূর্বের বাছাই করা কিওয়ার্ড গুলো (প্রতিমাসে সার্চ ভিলিউম 10k-100k, কিংবা 100k-300k) নিয়ে কাজে নেমে পরা । এসবের ক্ষেত্রেও আপনার কম্পিটিটরদের থেকে ভালো মানের কন্টেন্টে দেওয়ার চেষ্টা করুন । সাথে আপনার কিওয়ার্ড (Ratio অনুযায়ী) ইন্টারনাল লিংকিং করুন । যেটা দেখে ন্যাচারাল মনে হয় ।
এখন টার্গেট নিন 5-6 টা কিওয়ার্ড রেংক করানোর যেসব কিওয়ার্ডের প্রতিমাসে সার্চ ভিলিউম 10k-100k, কিংবা 100k-300k.
কেনো একটি সাইট করতে বললাম?
আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কেনো একটি সাইট তৈরী করতে বললাম? দুটি বা তিনটি কেনো নয়? ভাই, যখন আপনি একটি সাইট নিয়ে কাজ করবেন তখন রেগুলার আর্টিকেল পাবলিশ করতে পারবেন । মন থাকবে শুধু এক জায়গায় স্থির ! যখন এই সাইট থেকে ভালো ফলাফল পেতে শুরু করবেন, তখন একটি কেনো? আরো দুইটি কিংবা তিনটি সাইট নিয়ে কাজ করতে পারবেন ।
সব শেষে কিছু কথা :
এটা আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা ! যদি এমন পোষ্ট আগে কেউ পড়ে থাকেন, তাহলে আমার কিচ্ছু করার নাই । এখানে নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম । আপনারা যদি ফলো করেন, আশা করি আপনি সফল হবার সম্ভাবনা 90% । তাই আর দেরি কিসের ? প্রভুর নাম নিয়ে কাজে নেমুন ।
এটা আমার জীবনের প্রথম বাংলায় লিখা আর্টিকেল ! বাংলায় লিখার স্পিড অনেক কম । বানান ভুলও থাকতে পারে । কোথাও ভুল থাকলে ছোট ভাই/ ভাতিজা মনে করে ক্ষমা করবেন । কারো কোন মন্তব্য বা সাজেশন থাকলে কমেন্ট করে বলতে পারেন । কেউ আবার ভাবেন না যে আমি সফল ব্লগার । আমি এখনো শিখতেছি ।
পোষ্ট টি ভালা লাগলে শেয়ার করে আমার লেখাটিকে সার্থক করুন (যদি পোষ্ট টি ভালো লাগে) । এরপর কোন বিষয়ে পোষ্ট করবো, সেটা কমেন্ট করে জানাবেন । সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ !